রাহুল দীপ হালদার।।
প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোর অনুভূতি সবসময়ই মনের গভীরে ছাপ ফেলে। এক সকালে আমি পরিকল্পনা করলাম প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুক্ষণ কাটানোর। ব্যস্ত জীবনের কোলাহল থেকে বেরিয়ে আমি গিয়েছিলাম কোলকাতার কাছে অবস্থিত সুভাষ সরোবরের কাছে।
সুভাষ সরোবর পৌঁছে দেখলাম, চারপাশে ছড়িয়ে আছে অপরূপ প্রকৃতির শোভা। বাতাসে মিশে ছিল ফুলের মিষ্টি সুবাস, আর দূরে দেখা যাচ্ছিল সরোবরের শান্ত জল। ভোরের কুয়াশার আবরণে ঘেরা গাছপালা যেন সোনালি আলোয় ঝলমল করছিল। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে পরিবেশটা আরও মনোমুগ্ধকর হয়ে উঠেছিল।
একটি ছোট্ট পায়ে চলা পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে আমি পৌঁছালাম সরোবরের পাড়ে। সেখানে বসে জলের স্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, সময় যেন থমকে গেছে। পাড়ে একটি বড় গাছের নিচে বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে অনুভব করলাম, প্রকৃতি আমাদের কতটা প্রশান্তি দিতে পারে।
এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা ছিল খুবই সহজসরল। ছোট ছেলেমেয়েরা সরোবরের চারপাশে দৌড়াদৌড়ি আর খেলাধুলায় মত্ত ছিল। তাদের খেলাধুলার উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছিল, জীবনের প্রকৃত আনন্দ এখানেই লুকিয়ে আছে। বয়স্ক মানুষেরা সরোবরের ধারে বেঞ্চে বসে গল্পে মশগুল ছিলেন। তাদের মুখের সুখী অভিব্যক্তি আমাকে মনে করিয়ে দিল, জীবনের আনন্দ আসলে ছোট ছোট মুহূর্তগুলোতেই লুকিয়ে থাকে।
দিনের শেষবেলায় সূর্য যখন সরোবরের জলে প্রতিফলিত হয়ে লাল আভা ছড়িয়ে বিদায় নিচ্ছিল, তখন প্রকৃতির সেই দৃশ্য আমার মনে গভীর ছাপ ফেলে। মনে হচ্ছিল, এই শান্তি ও সৌন্দর্য শহুরে জীবনে কখনও পাওয়া সম্ভব নয়।
প্রকৃতির মাঝে কাটানো এই সময় আমাকে নতুনভাবে জীবনকে দেখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে, প্রকৃতি আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই আমাদের উচিত প্রকৃতির যত্ন নেওয়া এবং তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য খুঁজে নেওয়া।