ফোন নিরাপদ রাখার উপায়: স্টেপ বাই স্টেপ গাইড

বাণীবিতান ডটকম।।

মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ। এটি ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকিং অ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টসহ বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্য সংরক্ষণ করে। তাই নিজের ফোন নিরাপদ রাখা অত্যন্ত জরুরি। নিচে স্টেপ বাই স্টেপ পরামর্শ দেওয়া হলো। যেগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার ফোনকে আরও নিরাপদ করতে পারেন।

ধাপ ১: শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বা PIN সেট করুন।

আপনার ফোনে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড, PIN, অথবা প্যাটার্ন লক ব্যবহার করুন। পাসওয়ার্ডটি অন্তত ৮-১২ অক্ষরের হওয়া উচিত এবং এতে সংখ্যা, বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর ও বিশেষ চিহ্ন থাকা প্রয়োজন।
কখনো সহজ অনুমেয় পাসওয়ার্ড (যেমন: 123456, birthdate) ব্যবহার করবেন না।

বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা (যেমন: ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেস রিকগনিশন) ব্যবহার করলে অতিরিক্ত সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

ধাপ ২: দুই-স্তরের যাচাইকরণ (Two-Factor Authentication) চালু করুন। গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপগুলোর জন্য দুই-স্তরের যাচাইকরণ চালু করুন।
এতে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশের সময় পাসওয়ার্ড ছাড়াও একটি ভেরিফিকেশন কোড প্রয়োজন হবে।
গুগল অ্যাথেনটিকেটর, Microsoft Authenticator বা Authy এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।

উদাহরণস্বরূপ, ব্যাংকিং অ্যাপ বা ইমেল অ্যাকাউন্টে 2FA চালু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ধাপ ৩: ফোন সফটওয়্যার আপডেট রাখুন। নিয়মিত ফোনের অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশন আপডেট করুন।
আপডেটগুলোতে নিরাপত্তা সংশোধনী (security patches) অন্তর্ভুক্ত থাকে যা হ্যাকিং প্রতিরোধে সহায়ক।

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার ফোনের একটি নতুন আপডেট আসে, সেটি অবিলম্বে ইনস্টল করুন।
ধাপ ৪: অজানা সোর্স থেকে অ্যাপ ডাউনলোড এড়িয়ে চলুন
শুধুমাত্র Google Play Store বা Apple App Store থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করুন।

থার্ড-পার্টি সোর্স থেকে ডাউনলোড করা অ্যাপগুলোতে ম্যালওয়্যার থাকতে পারে।
অ্যাপ ইনস্টল করার আগে এর রিভিউ এবং পারমিশন চেক করুন।
উদাহরণস্বরূপ, এমন কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না যার ডেভেলপার পরিচিত নয়।

ধাপ ৫: অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের পারমিশন বন্ধ করুন
অনেক অ্যাপ আপনার ফোনের ডেটা অ্যাক্সেস করতে চায় যা প্রয়োজনীয় নয়।
অ্যাপ পারমিশন ম্যানেজ করতে ফোনের সেটিংসে যান এবং অপ্রয়োজনীয় পারমিশন বন্ধ করুন।
উদাহরণস্বরূপ, ক্যামেরা অ্যাপের জন্য মাইক্রোফোনের অ্যাক্সেস বন্ধ রাখুন যদি তা প্রয়োজন না হয়।

ধাপ ৬: পাবলিক Wi-Fi ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
পাবলিক Wi-Fi ব্যবহারের সময় ব্যক্তিগত বা সংবেদনশীল তথ্য ব্যবহার করবেন না।
পাবলিক Wi-Fi এর পরিবর্তে মোবাইল ডেটা ব্যবহার করুন বা VPN ব্যবহার করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
উদাহরণস্বরূপ, ক্যাফেতে বসে অনলাইনে ব্যাংকিং করবেন না।

ধাপ ৭: ফোনের ডেটা এনক্রিপ্ট করুন

ডেটা এনক্রিপশন চালু করলে আপনার ফোন চুরি হলেও তাতে থাকা তথ্য সহজে উদ্ধার করা যাবে না।
অ্যান্ড্রয়েড এবং iOS ফোনে ডেটা এনক্রিপশন অপশন সাধারণত বিল্ট-ইন থাকে। সেটিংস থেকে এটি চালু করুন।
উদাহরণস্বরূপ, অ্যান্ড্রয়েড ফোনে Settings > Security > Encrypt Phone অপশনটি ব্যবহার করুন।

ধাপ ৮: ফোন চুরি হলে “Find My Device” ব্যবহার করুন
Android ফোনে Google’s Find My Device এবং iPhone-এ Find My iPhone ফিচার চালু করুন।

ফোন হারিয়ে গেলে এর মাধ্যমে লোকেশন ট্র্যাক করা, ডেটা মুছে ফেলা বা ফোন লক করা সম্ভব।

উদাহরণস্বরূপ, আপনার ফোন কোথায় আছে তা আপনি অন্য একটি ডিভাইস থেকে খুঁজে বের করতে পারবেন।

ধাপ ৯: রেগুলার ব্যাকআপ রাখুন
গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এবং তথ্যের রেগুলার ব্যাকআপ রাখুন।
ক্লাউড স্টোরেজ (যেমন: Google Drive, iCloud) ব্যবহার করুন অথবা এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভে সেভ করুন।

উদাহরণস্বরূপ, আপনার ফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়মিত একটি নিরাপদ জায়গায় ব্যাকআপ করুন।

ধাপ ১০: অ্যান্টি-ভাইরাস অ্যাপ ব্যবহার করুন

নির্ভরযোগ্য অ্যান্টি-ভাইরাস অ্যাপ ইনস্টল করুন যা আপনার ফোনকে ম্যালওয়্যার ও ভাইরাস থেকে রক্ষা করবে।

উদাহরণস্বরূপ: Avast Mobile Security, Norton Mobile Security।

অ্যান্টি-ভাইরাস অ্যাপ ফোনে থাকা সন্দেহজনক ফাইল বা অ্যাপ শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top