জীবনে মানুষকে যে বস্তু মানুষকে আলোর রথে চড়ে ঘুরে বেড়াতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে, তা হচ্ছে বই। তবে এর মধ্যেও কিছু আলাদা বই থাকে। যা মানবজীবনের দর্শন হয়ে থাকতে পারে। তেমনই একটি বই ‘দি প্রফেট’। দি প্রফেট বইটির রচয়িতা কাহলিল জিবরান। একটু গভীর চিন্তার মানুষ যাঁরা, তাদের অনেকেই বইটি পড়েছেন। যাঁরা পড়েননি, তাদের দি প্রফেট বইটি পড়া খুব প্রয়োজন।
যেমন-বইটির শুরুতেই যে বাণীটি উচ্চারিত হয়েছে, তা হচ্ছে- ভালোবাসা যেমন তোমাকে রাজমুকুটে ভূষিত করে, তেমনি ক্রুশবিদ্ধও করে।
কাহলিল জিবরানের দি প্রফেট এ বইটি ১৯২৩ সালে নিউইয়র্কে প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটি কাহলিল জিবরানের অতিন্দ্রিয়বাদী গদ্য কবিতার সংকলন। বইটি যাঁরা পড়ে ধারণ করেছেন, তাদের মন্তব্য এমন যে-‘দি প্রফেট’ আমার জীবনেরই একটি অংশ। আর এই বইটি এতই গভীর দর্শনে ভরপুর, যে আমেরিকায় এটিকে ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তাই কালজয়ী এই বই অনুবাদ হয়েছে কমপক্ষে ২০টি ভাষায়।
কাহলিল খলিল জিবরানের আগে নাম ছিল-জুবরান খলিল জুবরান। ১৮৮৩ সালের ৬ জানুয়ারি লেবাননে এক খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কাহলিল জিবরান একাধারে কবি, সাহিত্যিক ও চিত্রকর। কাহলিল জিবরানের দি প্রফেটের পাশাপাশি স্যান্ড এন্ড ফোম নামে আরো একটি বই প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৬ সালে। দুটি বই-ই খুব পাঠক প্রিয়তা পেয়েছে।
বইটিতে কাহলিল জিবরান লিখেছেন, সকল কর্ম ও সকল ভাবনা মিলেই কি ধর্ম নয়? তাঁর এই চিন্তা ও উক্তিটি মানুষকে একটি নিগুঢ় সত্যের কাছাকাছি নিয়ে যায়। যা বাস্তবের এবং দৈনন্দিন ভাষায় চাপা পড়ে যায়।
কাহলিল জিবরান ও দি প্রফেট এই বই সম্পর্কে আমার কাছে প্রথম যিনি ধারণা দেন, তিনি আমার গুরুজন এম জসীম উদদীন। একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। যাঁর কাছে এই বইয়ের প্রথম ধারণা পেয়েই বুঝেছিলাম, এই বই সাধারণ কিছু নয়। তাঁর উপদেশ পেয়ে বইটি খুঁজতে খুঁজতে একসময় পেয়ে গেলাম। পড়ে দেখলাম, সত্যিই এ সাধারণ বই নয়। যতই পড়ি, ততই মনে হয়েছে যেন অসীম কোনো রসাস্বাদন করে চলেছি। ঠিক তেমন করেই বাংলায় অনুবাদ করেছেন চৌধুরী মুশতাক আহমেদ। তাঁর অনুবাদে ঠিক ঠিক যেন কাহলিল জিবরানের দি প্রফেট বইয়ের গভীর সত্য মর্মে মর্মে উপলব্ধি হতে লাগলো।
প্রিয় পাঠক, সত্যকে উপলব্ধি করার অসীম সাধ যদি জাগে, তবে কাহলিল জিবরানের দি প্রফেট বইটি আপনার পড়া উচিত।
Pingback: কাহলিল জিবরানের ১০টি অনুপ্রেরণামূলক উক্তি | banibitan.com