
বাণীবিতান ডেস্ক।।
বিয়ে! তাও মাত্র এক ঘণ্টার জন্য। প্রিয় পাঠক, এ কথা শুনে নিশ্চয়ই অবাক বনে গেছেন, তাইতো? অবাক হওয়ারই কথা তবে মাত্র এক ঘণ্টার এই বিয়ের খবর ভুল নয়।
মাত্র এক ঘণ্টার জন্য কম বয়সী তরুণীদের বিয়ে করা যায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। আর এ বিয়ে সেদেশে রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃত। এ ধরনের বিয়েকে বলা হয় মুতাহ বিয়ে। চীনেও একদিনের জন্য বিয়ে করা যায়। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভিডিওর শেষ পর্যন্ত দেখতে হবে।
ইসলামে যেহেতু পতিতাবৃত্তি বা বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক হারাম। তাই এই ধরনের বিয়ে চালু রয়েছে ইরানে।
ওই দেশে বিয়ে ছাড়া একসঙ্গে যুবক-যুবতীর থাকাকে বলা হয় ‘হোয়াইট ম্যারেজ’ বা সাদা বিয়ে। সেখানে ইসলামী আইনে নারী-পুরুষের এভাবে একসঙ্গে থাকা অবৈধ। কিন্তু তারপরও চলছে এই সাদা বিয়ে।
ইরানে অনেক যুগলই তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করতে চান না। এর কারণ হচ্ছে দেশটির ক্রমবর্ধমান বিবাহবিচ্ছেদের হার। কারণ দেশটিতে প্রতি পাঁচটি বিয়ের একটি বিচ্ছেদ হয়। এর মধ্যে রাজধানী তেহরানে বিবাহ বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি।
ইরানের আইনে বিয়ের বাইরে কোনো নারী-পুরুষের শারীরিক সংস্পর্শ ঘটলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ কারণে যে যুগলরা এ রকম সাদা বিয়ে করেছেন -তারা এটা নানাভাবে গোপন রাখেন, যাতে লোকের চোখে তা ধরা না পড়ে।
সাদা বিয়ে করেছেন এমন কোনো নারী যদি অত্যাচারিত হন তাহলে তিনি পুলিশের কাছে যেতে পারেন না, কারণ তাহলে তিনি ও তার সঙ্গী উভয়কেই ব্যভিচারের দায়ে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে ইরানের তরুণ প্রজন্মকে বিয়েতে উৎসাহিত করতে চালু হয়েছে হামদানের মতো ডেটিং অ্যাপ । বিয়ের প্রাথমিক খরচ মেটাতে সুদমুক্ত ঋণও দেওয়া হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, বিয়ে নিয়ে বিচিত্র আচার প্রচলিত আছে ইরানে। দেশটিতে ১৩ বছর বয়সী মেয়ে এবং ১৫ বছর বয়সী ছেলেদের বিয়ে দেওয়া বৈধ।
দেশটিতে বিয়ের আগে নারীকে কুমারীত্বের সার্টিফিকেট দিতে হয়। এ ছাড়া মেয়ের বয়স ১৩ বছর হলে পালক কন্যাকে বিয়ে করতে পারেন বাবা।
ইরানের আছে হাজার বছরের ইতিহাস। তবে দেশটিতে ইসলামের ছোঁয়া লাগে সপ্তম শতকে। আরব মুসলিমরা ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দে পারস্য সাসানীয় সাম্রাজ্যে আক্রমণ শুরু করে। পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে তারা এলবুর্জ পর্বত ও কাস্পিয়ান সাগরের তীরবর্তী সমভূমি ব্যতীত সমগ্র ইরান করায়ত্ত করে। ৬৫১ সালে তারা সাসানিদ সাম্রাজ্যের পূর্ণ পতন ঘটাতে সক্ষম হয়।
এর পর প্রায় দুই শতাব্দী ধরে ইরান আরব ইসলামিক সাম্রাজ্যের অধীনে। এ সময় মূল ইরানের বাইরে বর্তমান পশ্চিম আফগানিস্তানের হেরাতেও এই সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটে। ইসলামের খলিফারা প্রথমে মদীনা ও পরবর্তীকালে সিরিয়ার দামেস্ক ও শেষ পর্যন্ত ইরাকের বাগদাদ থেকে ইরান শাসন করতেন।
জানা গেছে, এ ধরনের বিয়ে শুধু ইরানেই নয়। চিনের হুবেই প্রদেশেও ঘটছে প্রতিনিয়ত। চিনে দারিদ্র্যের কারণে যারা বিয়ের সময় পুত্রবধূদের উপহারও অর্থ দিতে পারেন না, তাদের বিয়ে হয় না। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার ছেলেরা এক অনন্য পদ্ধতিতে বিয়ে করে। আর সেভাবেই তারা বিবাহিত হিসেবে স্বীকৃতিও পায়। প্রধানত এই প্রদেশের গ্রামাঞ্চলে একদিনের বিয়ে হয়। সেখানে বিয়ে হয় মাত্র ২৪ ঘণ্টার জন্য। এই বিয়ে হয় অত্যন্ত গোপনভাবে। গত ৬ বছরে এই প্রবণতা দ্রুতহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিনের কিছু অঞ্চলে এমন প্রথাও আছে যেখানে কোনো পুরুষ অবিবাহিত থাকলে মৃত্যুপথেও তার বিয়ে দেওয়া হয়। আর যে মেয়েরা একদিনের জন্য কনে সাজেন তাদেরকে অনেক টাকা দেওয়া হয়